গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কি না জানতে চান? গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ সময় মায়ের শরীরে যেমন পরিবর্তন ও বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। তেমনি শিশুর ও সঠিক ভাবে বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার খুবই প্রয়োজন হয়।
তোকমা বা (Basil seeds) একটি প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর উপাদান, যা আপনার শরীর ঠান্ডা রাখতে, হজম শক্তি বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করে থাকে। গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কিনা, কতটা খাওয়া উচিত, উপকারিতা
ও সতর্কতা - পুষ্টিবিদের দৃষ্টিতে বিস্তারিত জানুন এই আর্টিকেলে মাধ্যমে।
পেজ সূচিপত্র: গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কি?
তোকমা কি? জেনে নিন
আমরা মোটামোটি সবাই জানি, তোকমা (Basil seeds) হচ্ছে তুলসী গাছের শুকনো
বীজ, যা আকারের ছোট ও কালো রঙের হয়। যখন এটি পানিতে ভিজাবেন তখন বাইরের
অংশে স্বচ্ছ জেলির মতো স্তর দেখাবে। যা খেতে অনেকটা নরম এবং সহজপাচ্য। তোমকা
সাধারণত (Basil seeds) নামে পরিচিতি এবং আমাদের দেশে গ্রাম বা শহরে শরবত,
ফালুদা কিংবা বিভিন্ন পানীয়তে ব্যবহার খাওয়া হয়।
এটি প্রাচীন কাল থেকে তোকমা ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যা শরীর ঠান্ডা
রাখতে, হজম শক্তি বাড়াতে এবং কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ কার্যকরী। এছাড়াও এতে
প্রচুর ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গরমের দিনে তোকমা শরীরকে সতেজ রাখতে বেশ
উপকারী।
গর্ভাবস্থায় তোকমার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া জরুরী। এতে তোকমা বীজে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন,
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। গর্ভাবস্থায় এগুলো খেলে হজম
শক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং হাড় ও দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া শরীরের
আয়রন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে, যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর সুস্থতার
জন্য বেশি প্রয়োজন। তোমকা বীজ দেখতে ছোট হলেও এটি ভীষণ পুষ্টিকর। প্রতি ১০০
গ্রামে এতে থাকে প্রায়-
- প্রোটিন: ২০ গ্রাম - শিশুর বৃদ্ধি ও কোষ গঠনে কার্যকরী।
- ফাইবার: ৪০ গ্রাম - কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
- ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম - শিশুর হাড় ও দাঁতের বিকাশে সহায়ক।
- আয়রন - রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড - শিশুর মস্তিষ্ক ও চোখের গঠনে সহায়ক।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট - শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এইসব পুষ্টিগুণের কারণে তোকমা গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে
পুষ্টির ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূকিকা রাখে।
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া যাবে কি?
অনেকেই মনে মনে ভাবছেন? গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া ঠিক হবে না, এই ধারণা একদম ভূল।
ডাক্তার ও পুষ্টিবিদদের মতে, গর্ভাবস্থায় যদি সঠিক পরিমাণে ও সঠিক নিয়মে তোকমা
দানা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও উপকারী। এটি হচ্ছে প্রাকৃতিক এবং উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন
একটি খাবার, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মুক্ত থাকায় শরীরের বিভিন্ন স্বাস্থ্য
সমস্যা ও সমাধানে বিশেষভাবে কাজ করে।
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া সাধারণত নিরাপদ বলা যায়, কারণ এটি প্রাকৃতিক ও
তেলযুক্ত খাদ্য তবে, যেকোনো খাবারের মতো অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এসময়
নিয়ম মাফিক খাবার গ্রহণ করা দরকার। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অতিরিক্ত তেল বা গরম
মসলা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলে বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন হজমে সমস্যা
বা বুক জ্বালা পোড়া ইত্যাদি।
সাধারণ নিয়মে তোকমা খেলে সমস্যা হবে না। যদি আপনার গর্ভাবস্থায় হওয়া আগে থেকেই
এলার্জি বা বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে তোকমা খাওয়ার আগে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার। কারণ সবকিছু বিপরীত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
থাকে। গর্ভাবস্থায় সবকিছু নিয়ম মাফিক চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়া করতে হয়। সামান্য
কিছু ভূলে গর্ভাবস্থায় অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে, এজন্য সর্তক থাকা
উচিত।
গর্ভাবস্থায় তোকমার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। কারণ এতে
রয়েছে ভিটামিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীররে শক্তি যোগাতে সহায়তা করে এবং সুস্থ
বিকাশে ভূমিকা রাখে। তবে এটি পরমাণ মত অবশ্যই খাওয়া উচিত।
১। হজমে সহায়ক ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: তোকমা শরীরের হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং
পাচন শক্তি বাড়াতে সহায়ক। এটি পেটের গরম কমায় ও অম্লতা দূর করে মানসিক শান্তি
দেয়। ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে
অন্ত্রের গতি স্বাভাবিকভাবে কাজ করে।
২। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে: গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া উপকারিতা অনেক।
তোকমা শরীরকে প্রাকৃতিক ভাবে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এটি আপনার শরীরের
অতিরিক্ত গরম কমিয়ে আরাম দেয়। নিয়মিত তোকমা খেলে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা
ভারসাম্য বজায় রাখে। এর ফলে গর্ভাবস্থায়ও মা ও সতেজ ও স্বস্তিদায়ক অনুভূতি মনে
করে।
৩।পুষ্টি সরবরাহে ভূমিকা রাখে: তোকমা বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ থাকায়
শরীরকে শক্তি যোগায়। এটি মা ও শিশু প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণে সহায়ক ভূমিকা
রাখে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হাড়, দাঁত ও ত্বকের সঠিক বৃদ্ধি ও
বিকাশে সহায়তা করে। ফলে গর্ভাবস্থায় সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে।
৪। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে: তোকমা ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা
রাখতে সাহায্য করে। এটি অপ্রয়োজনীয় ক্ষুধা কমিয়ে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া রোধ
করে। শরীরে চর্বি জমাতে বাধা দেই এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। গর্ভাবস্থায়
অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধিতে প্রতিরোধে কার্যকর। ফলে মা সুষ্ট থাকে এবং শিশুর জন্য
স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হয়।
৫। রক্তে চিনির মাত্রা সঠিক রাখে: তোকমা শরীরে শর্করার শোষণ ধীরে ধীরে ঘটায়। এটি
রক্তের হঠাৎ চিনি বেড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
গর্ভাবস্থায় রক্তে চিনির মাত্রা সঠিক রাখতে সহায়ক। ফলে মা ও শিশুর সুস্থতা
বজায় থাকে।
৬। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে: গর্ভাবস্থায় তোকমা দানায় আয়রন সহ
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকায় শরীরে রক্ত তৈরিতে কাজ করে। এটি শরীরে হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে
কার্যকর ভূমিকা রাখে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখায় মা ও শিশুর জন্য উপকারী। ফলে
মা শক্তি পায় এবং শিশু সঠিক বৃদ্ধির নিশ্চিত হয়।
৭। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: তোকমা দানায় ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
থাকায় শরীরকে সুরক্ষা দেয়। এটি সংক্রামক ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থার মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরকে
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে মা সুস্থ থাকে এবং শিশুর
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৮। মস্তিষ্ক ও চোখের বিকাশে ভূমিকা রাখে: তোকমা তে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুর
মস্তিষ্কের সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশের সহায়ক। এটি স্নায়ুতন্ত্র মজবুত করে। এবং
স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ও অন্যান্য উপাদান চোখের সুস্থতা
বজায় রাখে। গর্ভাবস্থায় শিশুর দৃষ্টিশক্তি সঠিকভাবে গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখে। ফলের শিশুর মস্তিষ্ক ও চোখ দুটোই সুস্থভাবে বিকশিত হয়।
৯। গ্যাস্ট্রিক ও অম্লতা দূর করে: তোকমা হজম প্রক্রিয়া সহজ করে গ্যাস্টিক সমস্যা
কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের অতিরিক্ত এসিড কমিয়ে পেটের অম্লতা দূর করে।
নিয়মিত ও সঠিক পরিমাণ খেলে পেটের অস্বস্তি ও পেট ফাঁপা ভাব কমে যায়।
শরীরকে হালকা ও আরামদায়ক রাখে, ফলে গর্ভাবস্থায় মা সুস্থ থাকে এবং খাবার
সহজে হজম হয়।
১০। ডিটক্সিফিকেশন: তোকমা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করতে সহায়তা করে। এটি
যকৃত ও কিডনির কার্য ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত খেলে রক্ত শুদ্ধ থাকে এবং শরীর
পরিষ্কার থাকে। অতিরিক্ত তেল ও ময়লা পদার্থের প্রভাব কমায়। ফলে মা সুস্থ থাকে
এবং শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়।
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া সাধারণত নিরাপদ এবং পুষ্টিকর হলেও, এটি সঠিকভাবে এবং
পরিমিতভাবে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তোকমা খাওয়ার কিছু নিয়ম মেনে চললে মা ও শিশুর
জন্য সর্বাধিক উপকার পাওয়া যায়। তা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১। সঠিক পরিমাণে খাওয়া: তোকমা হালকা ও পুষ্টিকর হলেও অতিরিক্ত খাওয়া পেটের
অসস্তি, গ্যাস্ট্রিক বা হজমের সমস্যা করতে পারে। সাধারণত দিনে ১-২ চামচ
তেলের সাথে বা রান্না ব্যবহার করা যথেষ্ট।
২। পরিষ্কার ও সঠিক প্রস্ততি: তোকমা ব্যবহারের আগে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে
হবে। সরাসরি কাঁচা খাওয়া সম্ভব হলেও রান্নায় বা তেলে হালকা ভাজা করে খাওয়া
নিরাপদ ও হজমে সহজ করে।
৩। অন্যান্য খাবারের সাথে সামঞ্জস্য: তোকমা খাওয়ার সময় অতিরিক্ত মসলা, তেল বা
অতি গরম খাবারের সঙ্গে না খাওয়াই ভালো। এটি হজমের সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিক এড়াতে
সাহায্য করে।
৪। ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া: যদি গর্ভাবতী মহিলার পূর্বে কোন এলার্জি, ডায়াবেটিস
বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে তোকমা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৫। নিয়মিত কিন্তু সঠিক পড়িমাণ: তোকমা প্রতিদিন নিয়মিত খান, তবে বেশি নয়। এটি
শক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শিশুর বিকাশে সহায়ক।
সুতরাং, পরিষ্কার, পরিমিত এবং সুষমভাবে তোকমা খাওয়া গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ও
উপকারী, যা মা ও শিশুর জন্য পুষ্টি, শক্তি এবং সুস্থতা নিশ্চত করে।
সকালে খালি পেটে তোকমা খাওয়া উপকারিতা
সকালে খালি পেটে তোকমা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সারারাত তোকমা দানা এক গ্লাস পানিতে
ভিজিয়ে রাখুন, সকালে ঘুম থেকে উঠে পান করুন। এতে পেটের সকল ধরনের গ্যাস্টিক ও হজম
সমস্যা দূর হয়ে যাবে। খালি পেটে খাওয়ার ফলে তোকমার পুষ্টি উপাদান শরীরে দ্রুত
শোষিত হয় এবং প্রাথমিক শক্তি জোগায়। তোকমা বিভিন্ন জুস বা তরল জাতীয় পানীয় সাথে
মিশিয়ে খাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়ার অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় তোকমা সাধারণত নিরাপদ হলেও কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে খেলে
সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন:
১। অতিরিক্ত তেল বা ভাজা তোকমা খেলে হজমের সমস্যা: অতিরিক্ত ভাজা তেলযুক্ত তোকমা
পেট ফাঁপা, গ্যাস বা গ্যাস্ট্রিকের কারণ হতে পারে।
২। এলার্জি সম্ভাবনা: আগে থেকেই যদি কোন তেল জাতীয় বা উদ্ভিদ জনিত এলার্জি থাকে,
তবে তোকমা খাওয়ায় চর্মরোগ চুলকানি বা শ্বাসকষ্ট দেখা যায়।
৩। রক্তচাপ বা রক্তপাতের ঝুঁকি: অত্যাধিক তোকমা কিছু ক্ষেত্রে রক্ত পাতলা করতে বা
রক্তচাপ পরিবর্তন করতে পারে, বিশেষ করে যারা পূর্বে এ ধরনের সমস্যা ভোগ
করেছেন।
৪। অতিরিক্ত খেলা ওজন বৃদ্ধি: তেলযুক্ত তোকমা বেশি খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে, যা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
৫। গর্ভাবস্থায় অতি মসলাদার খাবারের সঙ্গে খেলে সমস্যা: তোকমা যদি খুব বেশি মসলা
বা অন্যান্য গরম খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়, হজমের অসুবিধা বা গ্যাস্ট্রিস বাড়তে
পারে।
সুতরাং, পরিমিত ও সঠিকভাবে তোকমা খাওয়া নিরাপদ, কিন্তু অতিরিক্ত বা ভুল ব্যবহারে
কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকতে পারে।
শেষ কথা
মনে রাখবেন, শরীর সুস্থ রাখার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার। শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে তোকমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় তোকমা খাওয়া
নিয়মিত ও পরিমিত ভাবে করলে মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকার নিয়ে আসে। এটি
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা থেকে শুরু করে শিশুর মস্তিষ্ক, হাড় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
তবে অতিরিক্ত খাওয়া বা অতি তেল যুক্ত ভাবে ব্যবহার এড়ানো জরুরি। সঠিকভাবে ব্যবহার
করলে এটি গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর। কিন্তু মনে
রাখা দরকার গর্ভাবস্থা একটি সংবেদনশীল সময়, তাই শরীরের অবস্থা ও ডাক্তারের
পরামর্শ অনুযায়ীই তোকমা খাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url