নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ১০ টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা - জানলে অবাক হবেন!

নিয়মিত গ্রিন টি পান করার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? এটি কিভাবে শরীরের টক্সিন দূর ও মেটাবলিজম বাড়াতে এবং ওজন কমাতে কাজ করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় এটি হ্রদরোগ, ডায়াবেটিস ও ত্বকের যত্নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। গ্রিন টি হচ্ছে প্রশান্তি দায়ক পানীয় যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্যকর কার্যকরী উপকারিতা।     
নিয়মিত-গ্রিন-টি-পান-করার-১০-টি-অবিশ্বাস্য-উপকারিতা
চা পাতাকে সামান্য প্রক্রিয়াজাত করে বানানো এই পানীয়তে রয়েছে এমন সব পুষ্টি উপাদান, যেগুলো মানব দেহে নিয়মিত সেবন করলে আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শারীরিক ও মানসিক ভাবে সস্তি দেয়। চলুন জেনে নিই, নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ১০ টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা কী কী এবং কেন এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হওয়া উচিত।    

পেজ সূচিপত্রঃ নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ১০ টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা - জানলে অবাক হবেন!  

গ্রিন টি কী এবং কেন এটি এত উপকারী?

আমরা সকলেই চা সম্পর্কে মোটামোটি জানি ও কম বেশি সকলেই চা পান করি। কিন্তু চায়ের মধ্যে গ্রিন টি হচ্ছে অন্য রকুম। গ্রিন টি হলো অপরিশোধিত চা পাতা থেকে তৈরি এক ধরনের চা, যেখানে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টিগুণ অক্ষত থাকে। এতে ক্যাফেইন (Caffeine) তুলনামূলক ভাবে কম থাকায় আপনার শরীর ও মন ঠিক থাকে। এটি হজম শক্তি বাড়ায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হ্রদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।  

তাই সমাজের স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে গ্রিন টি আজ এত  বেশি জনপ্রিয়। গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে, যারা প্রতিদিন অন্তত ২ কাপ গ্রিন টি পান করবে, তাদের হ্রদরোগের ঝুঁকি অনেক টা কমে যায়। একই সাথে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও ত্বকের সৌন্দর্যেও এতিবাচক প্রভাব ফেলে। 


শরীরের সঠিন ওজন রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম এবং এর পাশাপাশি দিনে অন্তত ২-৩ কাপ গ্রিন টি পান করা দরকার। নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ফলে আপনার সৌন্দর্য আরো সুন্দর হবে। নিজেকে স্মার্ট বানাতে চাইলে নিয়মিত গ্রিন টি পান করুন।   

নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ১০ টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা  

নিয়মিত গ্রিন টি পান করার উপকারিতা অনেক, যদি মনে করেন গ্রিন টি একটি সাধারণ পানি তাহলে আপনি ভূল করবেন। নিয়মিত গ্রিন টি পান করার মাধ্যমে আপনার শরীরের টক্সিন দূর করে, মানসিক ভাবে শান্তি দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত-গ্রিন-টি-পান-করার-১০-টি-অবিশ্বাস্য-উপকারিতা
সঠিক নিয়মে গ্রিন টি পান করার মাধ্যমে আপনার দৈনন্দিন জীবনকে শান্তিময় করে তোলে। নিচে নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ১০ টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো যার মাধ্যমে খুব সহজে বুঝতে পারেন।  

১। হ্রদরোগের ঝুঁকি কমায়:
গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটেচিন (Catechin) নামক দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের কোলেস্টেরল ও ক্ষতিকর ফ্যাট  কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এটি আপনার শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে, ফলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে। এসব কারণে হ্রদরোগের ঝুঁকি অনেক টা কমে এবং হৃৎপিণ্ড সুষ্ট রাখতে গ্রিন টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।    

২। ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা:
নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় এতে থাকে প্রাকৃতিক ক্যাটেচিন (Catechin) ও ক্যাফেইন (Caffeine) শরীরের বিপাকক্রিয়া (Metabolism) বাড়ায়, যা অতিরিক্ত ক্যালরি কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে দেহের ফ্যাট অক্সিডেশন বা চর্বি ভাঙার প্রক্রিয়া দ্রুত হয়, যার কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ খুব সহজ হয়। পাশাপাশি এটি ক্ষুধা কিছুটা কমায়, যা অতিরিক্ত খাবার প্রবণতা হ্রাস করে। তাই স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও সঠিক ব্যায়ামের সাথে গ্রিন টি ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।     

৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ করে পলিফেনল (Polyphenols) এবং ক্যাটেচিন (Catechin) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে গ্লুকোজকে কোষে গ্রহণ সহজ করে তোলে, ফলে দেহের রক্তে অতিরিক্ত শর্করা জমাতে পারে না। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে টাইপ- ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি  বেশ উপকারী।   

৪। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়:
নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় এতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- ক্যাটেচিন (Catechin) ও পলিফেনল (Polyphenols) শরীরে ফ্রি-র‍্যাডিক্যাল নামক ক্ষতিকর  উপাদানকে দমনে ভূমিকা রাখে। এই ফ্রি-র‍্যাডিক্যাল কোষের ডিএনএ নষ্ট করে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। গ্রিন টি কোষের সুরক্ষা দেয়, অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে এবং ক্যান্সার সৃষ্টির প্রক্রিয়া প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক কাজ করে।     

৫। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়: 
গ্রিন টিতে থাকা ক্যাফেইন (Caffeine) ও অ্যামিনো অ্যাসিড (Amino acids) এল-থিয়ানিন (L-Theanine) আপনার মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। ক্যাফেইন (Caffeine) মনোযোগ, স্মরণশক্তি ও সজাগ ভাব বৃদ্ধি করে, আর এল-থিয়ানিন (L-Theanine) মানসিক চাপ কমিয়ে মনকে শান্ত ও শক্তিশালী রাখে। এ দু'টির সমন্বয়ে গ্রিন টি আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা খুবই উন্নত করে, চিন্তাশক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।      

৬। মানসিক ভারসাম্য রক্ষা:
নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় এতে থাকা এল-থিয়ানিন (L-Theanine) নামক অ্যামিনো অ্যাসিড (Amino acids) স্নায়ুকে শিথিল করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি আপনার মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (Serotonin) ও ডোপামিনের (Dopamine) মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে মনকে প্রশান্ত রাখে। ফলে উদ্বেগ, দুশ্চিতা ও অস্থিরতা কমে গিয়ে মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ফলে আপনার মন সতেজ ও ইতিবাচক থাকে।     

৭। রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: 
মানব দেহের রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গ্রিন টি বিশেষ কার্যকরী উপাদন। গ্রিন টিতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ করে ক্যাটেচিন (Catechin) ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়। গ্রিন টি ত্বকের ভেতর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সানবার্ন, লালচে ভাব ও অকাল বার্ধক্য দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে ত্বককে ভেতর থেকে মজবুত  ও শক্ত করে তোলে এবং বাইরের ক্ষতির রশ্মি থেকে রক্ষা করে।   

৮। ত্বকের সৌন্দর্য ও বার্ধক্য রোধ: 
নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায় এবং পাশাপাশি ক্ষতিকর ফ্রি-র‍্যাডিক্যালের নষ্ট হওয়া কমায়, ফলে দেহের বলিরেখা ও ঝুলে যাওয়া দেরিতে হয়। পাশাপাশি গ্রিন টি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগ-ছোপ হ্রাস করে এবং দীর্ঘদিন ত্বককে তরুণ ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করার মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য ও বার্ধক্য রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।  


৯। মুখ ও দাঁতের যত্নের সহায়ক:
গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটেচিন (Catechin) মানব দেহের মুখে ক্ষতিকর জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়তা করে, যা দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি মুখের দুর্গন্ধ কমায় এবং দাঁতকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং প্রাকৃতিকভাবে দাঁতের যত্ন নিশ্চিত হয়।  

১০। দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করে:
নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষয় রোধ করে এবং শরীরের জৈবিক বার্ধক্য ধীর করে। এটি হ্রদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতা কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে, এর ফলে সুস্থ জীবনকাল বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করায় শরীর ও মনের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, যা দেহের দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করে।  

গ্রিন টি পান করার সঠিক  পদ্ধতি 

গ্রিন টি পান করার সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সর্বোচ্চ পাওয়া যায়। নিচে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেওয়া হলো:
  • পানি গরম করা - গরম পানি (৭০-৮০) সেলসিয়াসে রেখে ২-৩ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
  • পাতার পরিমাণ - ১ কাপ (প্রায় ২০০ মি.লি.) পানির জন্য ১-২ চা চামচ (২-৩ গ্রাম) গ্রিন টি ব্যবহার করুন।
  • ছাঁকানো - পাতাগুলো ছেঁকে নিন এবং চা আলাদা করে নিন, অল্প স্বাদের জন্য চাইলে লেবু, হানি, দারচিনি মিশানো যেতে পারে, তবে খুব বেশি স্বাদের জন্য চিনির ব্যবহার বেশি করা যাবে না।   
  • পান করার সময় - সকালে বা বিকেল বেলা খেতে পারেন। নিয়ম মাফিক খেলে হজমে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। 
  • পরিমাণ - দিনে (২-৩) কাপ গ্রিন টি পর্যাপ্ত, অতিরিক্ত গ্রিন টি খাওয়া হলে ঘুমের সমস্যা, পেট ব্যথা বা রক্তচাপ কমে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। 

গ্রিন টি উৎপাদনের প্রধান অঞ্চল সমূহের নাম 

গ্রিন টি আজ সারা বিশ্বে এক নামে জানে এবং জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। এর কারণ শুধু স্বাদের জন্য নয় এর মধ্যে রয়েছে পুষ্টিগুণে অন্যতম। আবহাওয়া ও মাটির গুনাগুনের উপর নির্ভর করে গ্রিন টি উৎপাদন ব্যবস্থা। 
নিয়মিত-গ্রিন-টি-পান-করার-১০-টি-অবিশ্বাস্য-উপকারিতা
 চলুই জেনে নেওয়া যাক গ্রিন টি উৎপাদনের প্রধান অঞ্চল সমূহের নাম: 

১। গ্রিন টি উৎপাদনের দিকে চীন (China)-কে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ হিসাবে ধরা হয়। জনপ্রিয় গ্রিন টি হিসাবে পাওয়া যায়: Longjing (Dragon Well), Biluochun.
 
২। উচ্চমানের গ্রিন টির জন্য জাপান (Japan)-কে বিখ্যাত দেশ হিসাবে ধরা হয়। এখানে: Matcha, Sencha, Gyokuro গ্রিন টি পাওয়া যায়। 

৩। ভারত (India) গ্রিন টি উৎপাদিত হয় বিশেষ করে আসাম, দার্জিলিং এবং নীলগিরি অঞ্চলে।

৪। শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) এক ধরনের গ্রিন টি পাওয়া যায় তার নাম হচ্ছে Ceylon Green Tea. 

৫। ভিয়েতনাম (Vietnam) সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিন টি রপ্তানিতে বেশ দ্রুত উন্নতি লাভ করেছে।

৬। বাংলাদেশ (Bangladesh) বেশ কিছু অঞ্চলে যেমন - সিলেট, পঞ্চগড়, চট্রগ্রাম ও বান্দরবান এলাকায় এখন গ্রিন টি উৎপাদনের চাহিদা বাড়ছে। 

গ্রিন টির অপকারিতা সমূহ (অতিরিক্ত পান করলে)

আমরা সবাই জানি গ্রিন টি নিয়মিত সেবন করলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শারীরিক ও মানসিক ভাবে সস্তি দেয়। এর উপকারিতা অনেক কারণ এতে থাকা পুষ্টিগুনাগুনে জন্য শরীরে টক্সিন দূর করে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। তেমনি অতিরিক্ত পান করলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন:

১। অতিরিক্ত গ্রিন টি পান করায় এতে থাকা ক্যাফেইন (Caffeine) মাথাব্যথা বা অনিদ্রা সৃষ্টি অন্যতম কারণ হতে পারে। দিনে যদি ৪ কাপের বেশি গ্রিন টি পান করেন তাহলে অনিদ্রা কারণে মানসিক অস্থিরতা দেখা যায়।

২। গ্রিন টি খালি পেটে পান করার জন্য বমি বমি ভাব বা অ্যাসিডিটি হতে পারে। অতিরিক্ত পান করার জন্য এতে থাকা ট্যানিন (Tannin) নামক উপাদান পাকস্থলীর এসিড অনেক বাড়িয়ে দেয়। 

৩। শরীরে রক্তচাপ বা রক্তে আয়রনের সারসাম্যে প্রভাব হারাতে পারে। বিশেষ করে যারা নিরামিষভোজী বা আয়রনের ঘাটতিতে ভুগছেন তাদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 


৪। গর্ভাবতী নারীদের জন্য অতিরিক্ত গ্রিন টি পান করায় অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই ক্ষতি গর্ভে থাকা শিশুর বিকাশে প্রভাব পড়ে। 

৫। অতিরিক্ত গ্রিন টি পান করার জন্য হ্রদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। কারণ এতে থাকা ক্যাফেইনের (Caffeine) মাত্রা অতিরিক্ত গ্রহণে হ্রদস্পন্দন হ্রদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া সম্ভবনা অনেক বেশি। এবং যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। 

ক্ষতি এড়াতে অতিরিক্ত গ্রিন টি পান না করার উপায় 

কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো নয়। গ্রিন টি উপকারিতা উপভোগ করতে নিয়ম মাফিক পান করুন। নিয়ম ছাড়া ইচ্ছে মতন গ্রিন টি পান করলে বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে। তাই নিয়ম অনুযায়ী গ্রিন টি পান করা দরকার।যেমন: 
  • প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে যেন দিনে ২-৩ কাপের বেশি গ্রিন টি পান করা যাবে না।
  • খালি পেটে ও রাতে ঘুমানো আগে গ্রিন টি পান করা যাবে না, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • মনে রাখতে হবে খাবারের যেন ১ ঘন্টা পরে গ্রিন টি পান করা হয়।
  • ফুটন্ত পানিতে নয় হালকা গরম (৭০-৮০) সেলসিয়াস পানিতে তৈরি করুন।
  • গ্রিন টি তে চিনি বা দুধ কখনো নয়, চাইলে হালকা মধু বা লেবু মিশাতে পারেন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যেন ডিহাইড্রেশন তৈরি না হয়।
  • শারীরিক অসুস্থতা গর্ভবতী বা বিভিন্ন অসুখে ওষুধগ্রহণ কারী অবশ্যই ডাক্তারে পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

শেষ কথা 

পরিশেষে একটা কথা বলতে পারি, গ্রিন টি আমাদের শরীর ও মনের জন্য এক অসাধারণ প্রাকৃতিক পানীয়। নিয়ম মাফিক ও সঠিক পরিমাণে গ্রিন টি পান করলে এটি শরীর কে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, শরীর ফিট রাখতে চাই তাদের জন্য গ্রিন টি হতে পারে একটি নিরাপদ সহায়ক। শুধু শারীরিক দিক নয়, মানসিক চাপ কমাতে ও মনকে হাসি খুশি রাখতে গ্রিন টির  ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।      


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url