জামের বিচি ফেলে দেন? - জেনে নিন রহস্যজনক উপকারিতা

জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। এই ছোট বিচির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে রহস্যজনক উপকারিতা, যা জানার পর আপনার আর কখনোই জামের বিচি ফেলবেন না? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তি বৃদ্ধি, লিভার ও কিডনির সুরক্ষা রাখতে এবং ত্বকের যত্নে  
জামের-বিচির-উপকারিতা
জামের বিচির উপকারিতা অনেক। জামের বিচির খাওয়ার মাধ্যমে আপনার জীবন বদলে যেতে পারে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করি আমার আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার অনুরোধ রইলো -  

পেজ সূচিপত্র ঃজামের বিচি ফেলে দেন? - জেনে নিন রহস্যজনক উপকারিতা  

জামের বিচি বা বীজের ১০টি রহস্যজনক উপকারিতা 

প্রতিদিন জাম খাচ্ছেন? কিন্তু জামের মধ্যে থাকা বিচি ফেলে দিয়ে আপনারা ১০টি রোগের মহা ঔষধ নষ্ট করছেন না তো? জামের বিচির উপকারিতা অনেক, চলুন তাহলে জেনে আসি জামের বিচি আমাদের শরীরে কি রকম উপকারিতা নিয়ে আসে, সে সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে -  

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে:
জামের বিচির উপকারিতা আসলে অনেক বেশি। এটি আপনার শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। জামের বিচির মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক এমন বেশ কিছু উপাদান যেগুলোর ফলে রক্তে থাকা চিনি কমাতে সহযোগিতা করে, যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।  

রক্ত পরিষ্কার করে:
শরীরের রক্ত পরিষ্কার রাখতে জামের বিচির কার্যকারিতা অনেক বেশি। জামের বিচি যদি পেস্ট করে খাওয়া যায়। এতে করে জামের বিচির মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদানের ফলে রক্তে থাকার জীবাণু ধ্বংস হয় আর রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।  

লিভার ভালো রাখে:
আপনার শরীরের লিভার যদি প্রাকৃতিক উপায়ে ভালো ও সুষ্ট রাখতে চান? তাহলে জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। কারণ জামের বিচির পেস্ট অথবা জামের বিচির ভর্তা  লিভার পরিষ্কার রাখতে সহযোগিতা করে।  

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জাম ও জামের বিচির কার্যকারিতা অনেক। জাম ও জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে সকলের ভালোভাবে জানা প্রয়োজন। কারণ জাম এবং জামের বিচির মধ্যে রয়েছে, প্রাকৃতিক এন্টি অক্সিডেন্ট। এই প্রাকৃতিক এন্টি অক্সিডেন্ট মাধ্যমে আমাদের রক্ত পরিষ্কার থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে:
জামের বিচির উপকারিতা এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। যাদের হজমজনিত সমস্যা রয়েছে, অল্প কিছু খাওয়ার মাধ্যমে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তারা প্রতিদিন জামের বিচির পাউডার অথবা পেস্ট একটু করে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।    

চর্মরোগ কমাতে  পারে:
যাদের চর্মরোগের সমস্যা রয়েছে যেমন বিভিন্ন ধরনের ঘা, পচরা অথবা ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। সে স্থানে জামের পাতার রস লাগাতে পারেন। জামের বিচির পেস্ট করে খেলে এই সকল চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। জামের বিচির উপকারিতা এর মধ্যে এটি একটি অন্যতম উপাদান। 

হার্ট ভালো রাখে:
জাম খাওয়ার ফলে যেমন বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। ঠিক তেমনিভাবে জামের বিচির উপকারিতা ও অনেক রয়েছে, তাই জমের বিচি ফেলে দেওয়া উচিত নয়। জামের বিচির পেস্ট অথবা পাউডার খাওয়ার ফলে হার্ট ভালো রাখতে পারবেন।   

ওজন কমাতে সাহায্য করে:
শরীরের ওজন বেড়েই চলেছে দুশ্চিন্তা হচ্ছে? ওজন কমাতে জাম খাচ্ছেন আর জামের বিচি ফেলে দিচ্ছেন? শরীরের ওজন কমাতে জাম ও জামের বিচির উপকারিতা অনেক বেশি। তাই এই জামের বিচির পেস্ট অথবা পাউডার খাওয়ার ফলে কিন্তু আপনারা আপনাদের ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।  

মাথাব্যথা ও টেনশন কমায়:
জাম এবং জামের বিচির উপকারিতা অনেক রয়েছে তার মধ্যে আরও একটি উপকারিতা হচ্ছে মাথা ব্যথা ও টেনশন কমাতে আপনাদের সহযোগিতা করবে। যাদের মাথাব্যথা এবং অল্পতে টেনশন করেন তারা জাম ও জামের বিচির পেস্ট অথবা পাউডার করে নিয়মিত খেতে পারেন।

জামের বিচির গুড়া খাওয়ার নিয়ম ও সময় 

জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে আপনাদেরকে আমি জানিয়ে দিয়েছি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। শুধুমাত্র জাম নয় জামের বিচির ও অনেক উপকারিতা রয়েছে, কিন্তু জামের বিচির পাউডার আপনারা কিভাবে খাবেন বা পেস্ট কিভাবে তৈরি করবেন সে সম্পর্কে এখন আপনাদেরকে সঠিক তথ্য জানতে হবে - 
  • সঠিকভাবে জামের বিচির উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই জামের বিচি খাওয়া সঠিক নিয়ম জানতে হবে। তাই সর্বপ্রথম পাকা জামের বিচিগুলো বের করে ভালোভাবে রৌদ্রে শুকিয়ে নেবেন যতক্ষণ না পর্যন্ত ভালোভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। 
  • এরপর শুকনো বিচি গুলো ব্লেন্ডার কিংবা অন্যকিছু দিয়ে পিষে ভালোভাবে গুড়া তৈরি করে নিন। জামের বিচির উপকারিতা রয়েছে প্রচুর তাই আপনারা যদি একটু নিয়ম মেনে খেতে পারেন অবশ্যই উপকারিতা পাবেন।  
  • এরপর প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে হালকা গরম পানির মধ্যে এক চা চামচ জামের বিচির গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন। এর মাধ্যমে জামের বিচির উপকারিতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে সকালবেলা খালি পেটে খাওয়ার ফলে কিছুটা বমি বমি ভাব হতে পারে। তবে অভ্যাস হয়ে গেলে ঠিক হয়ে যায়।  
  • অথবা রাত্রে খাওয়ার পরে এক চা চামচ জামের বিচির গুঁড়া হালকা গরম পানির মধ্যে মিশিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারেন এভাবে জামের বিচির উপকারিতা পাবেন।   

জামের উপকারিতা ও অপকারিতা   

জামের যেমন প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা আছে ঠিক তেমনি জামের বিচির উপকারিতা অনেক  রয়েছে। ইতিমধ্যে আমি আপনাদেরকে জানিয়েছি জামের বিচি গুঁড়ো করে খাওয়ার ফলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায়। সেগুলো হচ্ছে রক্ত পরিষ্কার করে, ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করতে সহযোগিতা করে, চর্মরোগ দূর করতে সহযোগিতা করে, লিভার পরিষ্কার রাখে, জামের বিচির উপকারিতা সম্পর্কিত জানলেন প্রতিটা জিনিসেরই কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা থাকে সম্পর্কে একটু জেনে আসি -

জামের বিচির যত প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে আর প্রাকৃতিক উপাদান খাওয়ার ফলে কিছুটা পেটের গরমিলের সমস্যা হতে পারে। যেমন পাতলা পায়খানা, বদহজম, হালকা বমি বমি ভাব এইরকম সামান্য কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তবে সব সময় মনে রাখবেন জামের বিচির পেস্ট কিংবা গুড়া দুটাই বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। প্রথমত খুব সামান্য পরিমাণে  খাওয়া শুরু করা  উচিত। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন জামের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্য।  
 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url