১ মাসে নিজেকে পরিবর্তন করার ১০টি যাদুকরী উপায়
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে চলাতে পারছেন না? খুব হতাশাগ্রস্থ হচ্ছেন? কিভাবে
নিজেকে পরিবর্তন করবেন এবং নিজেকে সময় উপযোগী ও যুগ উপযোগী করে তুলবেন সে
সম্পর্কে জানতে চান?
তাহলে এখন আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরব এমন ১০টি উপায় যেগুলো
আপনি ১ মাস যদি নিয়ম মেনে করতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজে নিজেকে পরিবর্তন করতে
পারবেন। চলুন তাহলে ১ মাসে নিজেকে পরিবর্তন করার জাদু করে ১০ টি উপায় সম্পর্কে
আপনাদের সামনে তুলে ধরি -
১ মাসে নিজেকে পরিবর্তন করার ১০টি জাদুকরি উপায়
১ মাসের মধ্যে নিজেকে পরিবর্তন করতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম আপনার মধ্যে দশটি
পরিবর্তন আনতে হবে আপনি যদি দশটি পরিবর্তন আপনার মধ্যে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে
দেখবেন আপনি নিজেকে একটি অন্যরকম মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন। অনেক সময়
আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের নেগেটিভ মানুষজনের কারণে আমরা নিজেকে চিনতে ভুল
করি, আমরা কি করতে পারি না পারি সে সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হয় যার কারণে আমরা
নিজেকে ব্যর্থ মনে করি এবং দুর্দশার চরম পর্যায়ে পৌঁছানোর পর নিজের জীবনটা
মূল্যহীন হয়ে পড়ে তাই এইরকম পরিস্থিতিতে পড়ার আগে আপনি নিজেকে ভাবে গড়ে তুলুন
আজকে থেকেই। চলো নিচে আপনাদের সামনে এই দশটি উপায়ে সম্পর্কে আলোচনা করব এই ১০টি
উপায় আপনাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারলেই আপনি একজন সফল মানুষ হতে
পারবেন।
একটি পরিষ্কার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে : আপনি যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে
চান এবং আপনিও যদি চান অন্যদের মত সফল হতে তাহলে সর্বপ্রথম যে পদক্ষেপটি আপনার
নিজের জন্য গ্রহণ করতে হবে সেটি হচ্ছে একটি পরিষ্কার লক্ষ্য নির্ধারণ। এই
লক্ষ্যটা হতে হবে আপনার একদম পরিষ্কার এবং অপরিবর্তনীয়, এমনটা নয় যে আজকে আপনার
এই জিনিসটা হতে ইচ্ছে হলো কালকে অন্য কিছু এতে করে কখনোই লক্ষণ নির্দিষ্ট
হয় না তাই আজ থেকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষণ তৈরি করুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করা শুরু
করুন।
সবকিছুকে রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসা : নিজেকে পরিবর্তন করার দ্বিতীয়
পদক্ষেপ হিসেবে আপনাকে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে আপনার সারাদিনের সকল কাজকর্মকে একটি
রুটিন এর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে প্রথমত সময় মতো ঘুম, পড়াশোনা, খাওয়া দাওয়া,
খেলাধুলা, অতিরিক্ত কিছু কাজ এর সকল বিষয়কে সময়ের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে এবং
একটি রুটিন তৈরি করে নেবেন সময় মেনে যদি আপনি চলতে পারেন তাহলে আপনার জীবন
অবশ্যই পরিবর্তন হবে এবং আপনি সফল হতে পারবেন। মনে রাখবেন অবশ্যই সময়কে কাজে
লাগাতে হবে যারাই জীবনের সময়কে কাজে লাগিয়েছে তারাই আজ বড় বড় পর্যায়ে রয়েছে
এবং জীবনের সফল হয়েছে, তাই নিয়মাবর্তিতা ও সময়ের সদ্য ব্যবহারে আপনিও হতে
পারবেন সফল।
প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার উদ্যোগ গ্রহণ করুন :
প্রতিদিন নিজেকে নতুন কিছু শেখার সাথে অভ্যস্ত করে তোলা, এই বিষয়টি আপনার
আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী এবং নতুন
কিছু শেখার মাধ্যমে আপনি অনেক দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন যেগুলো আপনি সময়ের সাথে
তাল মিলিয়ে চলতে ব্যবহার করতে পারেন যেমন ধরেন কম্পিউটারের কাজ শিখে রাখা,
ফ্রিল্যান্সিং জগতের কিছু ছোটখাটো কাজ শিখে রাখা, গ্রাফিক্স ডিজাইন অথবা কোডিং
শেখা, এই সকল দক্ষতা অর্জন করলে আপনি কিন্তু ভবিষ্যতে একজন দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে
গড়ে তুলতে পারবেন।
নিজেকে চিনতে হবে এবং নিজেকে সময় দিতে হবে :
অনেক সময় নতুন কিছু করতে গেলে অথবা নিজেকে কিছুটা পরিবর্তন করতে গেলে একা
থাকা সত্তা হয় আর এভাবে আপনি প্রতিদিন ব্যায়াম কিংবা ইয়োগার মাধ্যমে আপনার
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তাই প্রতিদিন অন্তত 20 থেকে 30 মিনিট নিজেকে
সময় দিন ইয়োগা, মেডিটেশন করুন যাতে আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং
এক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে অবশ্যই সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে এবং রাত
৯ টা মধ্যে খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়তে হবে।
অপ্রয়োজনীয় সম্পর্ক ও সময় থেকে দূরে থাকুন : আপনি যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে
চান এবং নিজেকে পরিবর্তন করার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আমার মনে হয় সেটি
হচ্ছে আপনি সময় অপচয় করবেন না বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া কিংবা মোবাইলে গেমস
খেলা অথবা ফোনে facebook মিসকল করা এগুলো থেকে সময় নষ্ট না করে নিজে কিছু দক্ষতা
অর্জন করার চেষ্টা করবেন।
এবং আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার চারপাশে থাকা কিছু নেগেটিভ
মানসিকতার মানুষদের থেকে দূরে থাকুন যারা আপনাকে সব সময় আস্থা দেয় যে আপনি কিছু
করতে পারবেন না, কিংবা আপনি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবেন না আপনি একজন ব্যার্থ
মানুষ এই ধরনের মানসিকতার মানুষ থেকে সরে আসুন এবং পজেটিভ মানসিকতা সম্পন্ন
মানুষদের সঙ্গে মিশন দেখুন আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং আপনার মানসিক চাপও কমবে।
১ মাসের মধ্যে নিজেকে পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই এই সকল পদক্ষেপ গ্রহণ
করবেন।
সকালে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন :
১ মাসের মধ্যে নিজেকে পরিবর্তন করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই সুস্থ থাকতে হবে এবং
আপনার মানসিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এজন্য প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে
উঠবেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যায়াম করবেন ব্যায়াম আপনার শারীরিক শক্তি
বৃদ্ধি করতে সহযোগিতা করো এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে আপনার মানসিক চাপ কমবে ও
চোখের জন্য খুব ভালো।
ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে :
নিজেকে পরিবর্তন করার সব থেকে বড় ধাপ হচ্ছে আপনি ভুল করেছেন সেটি স্বীকার করুন,
ভুল করলে যে মানুষ হেরে যায় এমনটা না অনেক বড় বড় ব্যক্তি রয়েছে যারা নিজের
ভুল থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করে তারপরে তারা সফল হতে পেরেছে তাই আপনিও নিজে ভুল করলে
কখনোই ভেঙে পড়বে না বরং সেটি স্বীকার করবেন এবং কিভাবে এই ভুলটাকে সঠিক করা যায়
সে সম্পর্কে ধারণা নিবেন। একটা বিষয় সবসময় মনে রাখবেন " একজন সফল মানুষের
পেছনের গল্পে রয়েছে একজন ব্যর্থ মানুষ " আপনি এখন ব্যর্থ মানে যে আপনি ভবিষ্যতেও
ব্যর্থ থাকবেন এমনটা নয় তাই ব্যর্থতা থেকে আবারও নতুনভাবে শুরু করুন আপনি
নিশ্চয়ই সফল হবেন।
পজেটিভ কথা ভাবুন ও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন :
নিজের সম্পর্কে কখনো নেগেটিভ চিন্তা করবেন না নেগেটিভ চিন্তা বলতে এই যে আপনি
পারবেন না, আপনি ব্যর্থ হয়েছেন একবার, হয়তোবা আপনি আর সফল হতে পারবেন না, এই
সকল নেগেটিভ চিন্তাভাবনা কখনোই আপনার মনের মাঝে আসতে দিবেন না।
এর বিনিময়ে আপনি সব সময় পজিটিভ মানুষের সঙ্গে মিশন এবং নিজের সম্পর্কে পজেটিভ
চিন্তা করুন, আপনি এখন ব্যর্থ হয়েছেন মানে এমনটা নয় আপনি পরবর্তীতে সফল হতে
পারবেন না একবারের জায়গায় আপনি দুইবার চেষ্টা করুন সফলতা আপনার আসবেই তাই
নেগেটিভ মানুষের থেকে দূরে থেকে পজেটিভ চিন্তাভাবনা আপনার মধ্যে নিয়ে আসুন এতে
আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
সফল মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো :
জীবনের সঙ্গী বা বন্ধুত্বের প্রভাবটা অনেক বেশি থাকে " সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে " এই
বিষয়টি আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন আপনি যদি আপনার জীবনে ভালো বন্ধুত্ব কিংবা,
নেগেটিভ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলেন এতে করে আপনার নিজের মধ্যকার পজেটিভ
ধারণা কিন্তু বদলে যাবে আপনিও তাদের মত নিজেকে ব্যার্থ বলে মনে করতে শুরু
করবেন।
তাই অবশ্যই সফল মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো ধরন এতে করে যে ব্যক্তি সফল হয়েছে সে
আপনাকে বলতে পারবে কিভাবে কাজ করলে আপনি সফল হবেন আর কতটা পরিশ্রম করলে সফলতা
পাওয়া যায় তখন আপনার নিজের মধ্যেও পরিশ্রম করার একটি সম্ভাবনা জেগে উঠবে ইচ্ছা
জেগে উঠবে যে আপনিও পরিশ্রম করতে পারেন এবং সফলতা ধরতে পারবেন। এ সকল পজেটিভ
চিন্তাভাবনার ব্যক্তির সাথে মিশলে কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং সফল
হওয়ার রাস্তাটা আরো সহজ হয়। যে ব্যক্তি নিজে ব্যর্থ সে আবার আপনাকে কিভাবে
সফলতা রাস্তা দেখাবে তাই না, তাই সকল ব্যক্তির সাথে মিশন তারা দেখবেন আপনাকে
সফলতার দিকে ঠেলে দিবে।
ধৈর্য এবং সততা বজায় রাখুন :
জীবনে যে সকল ব্যক্তি সফল হতে পেরেছে অথবা যারা শূন্য থেকে নিজেকে পরিবর্তন করতে
পেরেছে তারা কিন্তু জীবনে অনেক ধৈর্য ধরেছে ধৈর্য ধারা কখনোই কোন কিছু পাওয়া
সম্ভব না তাই আপনিও জীবনে ধৈর্য ধারণ করা শিখুন।
এবং ধৈর্য ধারণ করুন ও সততা বজায় রাখুন কোন ধরনের অসৎকর্মে জড়িত হবেন না। একটা
বিষয় সবসময় মনে রাখবেন সফলতার কোন শর্টকাট রাস্তা হয় না সফলতা পেতে হলে অবশ্যই
কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, সততা এবং অনেক বেশি ধৈর্য ধারণ করতে হয়।
পরিশেষে লেখকের মন্তব্য :
রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url