রাতে ভালো ঘুম হচ্ছে না? - জেনে নিন এই ১০ টি কারণ

রাতে ভালো ঘুম হচ্ছে না

রাতে ভালো ঘুম হওয়া স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরী। রাতে ভালো ঘুম না হলে তার ফলে আপনার স্বাস্থ্যের ওপরে প্রভাব পড়ে যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের রোগ হিসেবে ধরা দেয়। এমনকি রাতে ভালো না হলে ডায়াবেটিসের সমস্যা সহ শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকা এরকম জটিলতম সমস্যা হতে পারে। তাহলে চলুন আমরা একটু জেনে আসি রাতে ভালো ঘুম না হওয়ার কারণ কি? এবং কোন উপায় গুলো মেনে চললে  রাতে ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে পারবেন। 

পর্যাপ্ত সময় দিনের আলোয় কাটানো : রাতে ভালো ঘুম হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় দিনের আলোয় কাটাতে হবে। পর্যাপ্ত সময় যদি আমরা দিনের আলো কিনব সূর্যের আলোতে কাটাই তাহলে কি হয় আমাদের শরীরের সব ধরনের তেল গুলো কাজ করে যার ফলে দিন শেষে প্রশান্তির ঘুম নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।  তাই আমাদেরকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় বা কিছুটা সময় সূর্যের আলোতে কাটাতে হবে। 

রাতে মোবাইল ব্যবহার কমানো : রাত্রেবেলা যদি আমরা ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহার করি এতে করে কি হয় মোবাইল থেকে যে আলোটি বের হয় সেটি আমাদের ঘুম দূর করতে সহযোগিতা করে তাই আমরা যদি রাত্রে বেলা মোবাইল দেখি এটি এই অন্তত ১ ঘন্টা আমাদের ঘুমের সময়টিকে পিছিয়ে দেবে, তার মানে হচ্ছে আপনারা যদি মোবাইল দেখার পর মোবাইলটা রেখেও দেন এরপরও ১ ঘন্টা আপনাদের ঘুম আসবে না। 

অতিরিক্ত চা ও কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন: বর্তমান সময়ে মানুষের কাজের চাপ যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনিভাবে চা ও কফ এর প্রতি আগ্রহ বেড়েছে অনেকে দিনে একদম ১০ থেকে ১৫ টা পর্যন্ত চা খেয়ে নাই অথবা পাঁচ কাপ কফি খেয়ে নিচ্ছে এরকম করলে ঘুমের সমস্যা তো দেখা দিবেই। প্রতি এক কাপ কফিতে ৪৫ মিনিট ঘুমের সময় পিছিয়ে যায়। তাই অন্তত সন্ধ্যার পর থেকে চা কিংবা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এতে করে কি হবে রাত্রে ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে পারবেন।

দুপুরবেলা অথবা দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস : আপনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যাদের দুপুরবেলা ঘুমানোর অভ্যাস হয়েছে মানে ভাত খাওয়ার পরে তারা দুপুরে এক থেকে দুই ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমানোর অভ্যাস করে তুলেছে কিন্তু এই ঘুমানোর কারণেই আপনার রাতের ঘুমের সমস্যা হতে পারে তাই দুপুর বেলা ঘুমানো থেকে কিছুটা বিরত থাকবেন। যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে তারা কিন্তু দিনের বেলা না ঘুমিয়েও রাতে ভালো ঘুমাতে পারে। আর যারা পরিশ্রম করে না তারা যদি দুপুরে ঘুমায় তাহলে কিন্তু তাদের রাতে ঘুম আসবে না এটাই স্বাভাবিক।

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন : আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে এই নিয়মিত রাতে ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে চাইলে অবশ্যই একটি নিয়মের মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং ঘুমোতে যেতে হবে তাহলে কি হবে যদি আপনারা প্রতিদিন সকাল আটটায় ঘুম থেকে ওঠেন এবং রাত নয়টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস ২ থেকে ৩ দিন করতে পারে, তাহলে দেখবেন পরবর্তী সময়ে প্রতিদিন আপনাদের সেই রাত ৯ টার সময় থেকে ঘুম আসা শুরু হবে এবং ঠিক সকাল ৮ টাই ঘুম ভেঙে যাবে।

আরামদায়ক বিছানা নিশ্চিত করুন:ঘুমের সমস্যার জন্য আরও একটি বড় কারণ হতে পারে আরামদায়ক বিছানা না থাকা আপনি যে বিছানায় ঘুমাবেন সেটি যদি আপনার জন্য আরামদায়ক না হয় তাহলে কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় ঘুম আসতে চায়না অথবা ঘুমের সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে কি করবেন অবশ্যই আরামদায়ক বিছানা নিশ্চিত করার জন্য আরামদায়ক তোষক, একটি সুতি বেডশীট নিশ্চিত করুন এবং প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানা চাদর পরিষ্কার করুন।

ঘরে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন  : আপনি যে ঘরে ঘুমাবেন সেই ঘরের যদি পরিবেশ ভালো না হয় তাহলে কিন্তু আপনার ঘুম হবে না। তাই আপনি যে ঘরে ঘুমাবেন সেই ঘরে ঠিকমতো বায়ু চলাচল তো হচ্ছে কিনা, ঘুমানোর ঘরে যেন অতিরিক্ত শব্দ না আসে, কারণ অতিরিক্ত শব্দের ফলে কিন্তু ঘুমের উপরে প্রভাব পড়ে, আবার আপনি যে ঘরে ঘুমাবেন সেখানে যদি ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ না হয় বা আলো বাতাসের কমতে থাকে তাহলে কিন্তু দম বন্ধ হয়ে আসার মতো অনুভূতি হয় এবং আপনি ঠিকমতো ঘুমাতে পারবেন না। 

দ্রুত রাতের খাবার শেষ করা : ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে চাইলে আপনারা ঘুমাতে যাওয়ার প্রায় এক থেকে দুই ঘন্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া শেষ করে নিবেন। রাতের খাবার শেষ করতে কেন বলছি কারণ আপনারা যদি ঘুমাতে যাওয়ার আধাঘন্টা আগে কিংবা দশ মিনিট আগে খাবার খান এবং তারপরে ঘুমোতে চলে আসেন এতে করে কি হবে পরবর্তীতে আপনাদের  বাথরুমের চাপ লাগতে পারে যার কারণে ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।

মানসিক চাপ দূর করতে ব্যায়াম করা  : অতিরিক্ত পরিমাণে মানসিক চাপ কিংবা কোন বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তা থেকে কিন্তু রাতের ঘুম ভালো হয় না অনেক সময় রাতে ঘুমিয়ে আসে না এইরকম মানসিক চাপে পড়ে যদি আপনার রাতের ঘুম না আসে তাহলে কিন্তু সাথে ব্যাপক ক্ষতি হয় মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব পড়ে আপনার ওজন বৃদ্ধি হয়ে যেতে পারে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায় তাই অবশ্যই মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ইয়োগা অথবা শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। শারীরিক ব্যায়াম এর মধ্যে রাখতে পারেন মেডিটেশন, খোলা আকাশে বা খোলা বায়োটে নিঃশ্বাস গ্রহণ করুন, মৃদু ছন্দের কোরআনের আয়াত অথবা হালকা গান শুনুন।  

রাতে ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন : যারা সারাদিন ঘরে বসে থাকেন বিশেষ করে যারা পড়াশোনা করছেন তাদের অনেক সময় ঘরেই বসে থাকতে হয় এক্ষেত্রে রাতে ঘুম আসে না কারণ তাদের যথাযথ পরিশ্রম করা হয় না আর শরীরে যদি পরিশ্রম না হয় ক্লান্তিবোধ না আসে তাহলে কিন্তু ঘুম আসে না এক্ষেত্রে আপনারা কি করতে পারেন প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার 20 মিনিট আগে থেকে শারীরিক ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন, এতে করে আপনার শরীরে ক্লান্তিবোধ আসবে এবং এই ক্লান্তি বোধ থেকে ভালো ঘুম আসবে। \

ডাক্তারের পরামর্শ  গ্রহণ  : বর্তমান সময়ে স্লিপিং ডিসঅর্ডার নামের এক ধরনের রোগ আছে যার ফলে মানুষের ঘুমের সমস্যা হয় ঘুমোতে পারেনা বা ঘুম আসে না এ ধরনের সমস্যা স্লিপিং ডিসঅর্ডার এর মধ্যে পড়ে ওপরে উল্লেখিত সব ধরনের নিয়ম মেনেও যদি আপনাদের ঘুম না আসে এক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে আপনারা স্লিপিং ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত, তাই দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করবেন কারণ ঘুমের সমস্যা হওয়ার কারণে কিন্তু শুধুমাত্র মস্তিষ্কের ক্ষতি হয় এমনটা নয় আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই সময় নষ্ট না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url