সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত - সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ
সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত এবং সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ করতে চান? এই সম্পর্কিত তথ্য জানতে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়তে হবে। সাজেক ভ্যালি খুবই সুন্দর একটি জায়গা এবং ভ্রমণের জন্য একদম সঠিক স্থান যেখানে আপনি প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।
তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানিয়ে দিবো, সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত এবং সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ কত টাকা খরচ হবে। সাজেক ভ্যালি যাওয়ার পথে আপনি সাজেকের সৌন্দর্য অনুভব করতে পারবেন। সাজেক ভ্যালি যাওয়ার পথ ধারে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে আকৃষ্ট করবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে আসি সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত - সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত।
পেজ সূচিপত্রঃ সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত - সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ
- সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত
- সাজেক ভ্যালি যাত্রা পথে মনোরম দৃশ্য
- সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের কিছু টিপস
- সাজেক ভ্যালি যাওয়ার খরচ কেমন এবং কিভাবে যাব
- সাজেক ভ্রমণ সম্পর্কে লেখক এর মন্তব্য
সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত
সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত সে সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়তে হবে। সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত। কর্ণফুলী নদী থেকে
উৎপন্ন নদীর নাম অনুযায়ী এই উপত্যকাটির নাম রাখা হয় সাজেক ভ্যালি। সাজেক ভ্যালি
এর আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেক ভ্যালিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে খাগড়াছড়ি জেলা
রাঙ্গামাটি জেলা উত্তর দিকে ত্রিপুরা ও পূর্ব দিকে ভারত।
সাজেক রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। তবে সাজেক যদি
খাগড়াছড়ি দীঘিনালয় থেকে যাওয়া যায় তাহলে বেশ সুবিধা হয়। খাগড়াছড়ির প্রধান
শহর থেকে সাজেক উপত্যকার দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার। সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের
মধ্যে খুবই সুন্দর একটি জায়গা। প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য এবং সমুদ্রের সৌন্দর্য
সাজেক ভ্যালিকে ঘিরে রাখে। সাজেক ভ্যালির মধ্যে অনেকগুলো ছোট ছোট নদী বয়ে গেছে।
পাহাড়ের গা বেয়ে এ সকল দৃশ্য মানুষকে আরো বেশি আনন্দিত করে তোলে। সাজেক ভ্যালিতে
মেঘ হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়। সাজেক ভ্যালির সবচেয়ে উপরের উপত্যকায় যদি ওঠা যায়
তাহলে মাঝখানে ছোট ছোট মেঘের কনা ভেসে বেড়াই যেগুলো দেখতে খুবই
সুন্দর।
সাজেক ভ্যালি যাত্রা পথে মনোরম দৃশ্য
সাজেক ভ্যালি যাত্রা পথে আমরা অনেক ধরনের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবো। পাহাড়ি
আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার দুপাশে সবুজ বনভূমি এবং লম্বা লম্বা আকাশ ছোঁয়া পাইন
গাছ এসব দেখলে আপনার মনে শান্তি এবং দুচোখ জুড়িয়ে যাবে। তো চলুন জেনে আসি যাত্রা
পথে আমাদের চোখে ঠিক কি রকম মনোরম দৃশ্যগুলো পড়বে সে সম্পর্কে
বিস্তারিত।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের সময় প্রতিটি বাঁকে দেখতে পাবেন নতুন নতুন দৃশ্য, কখনো দেখা
যাবে ঘন কুয়াশা, কখনো আবার উন্মুক্ত নীল আকাশ-এসব দেখে আপনার মনে হবে প্রকৃতি যেন
নিজ হাতে এসব কিছু সাজিয়ে রেখেছে। যাত্রা পথে প্রথমেই রুই লুই পাহাড় দেখা যাবে।
রুই রুই পাহাড়ের উচ্চতা ১,৭২০ ফুট। সাজেক এর রুই লুই পাহাড় টি বেশি জমজমাট।
বাংলাদেশের সবচেয়ে উচুতে যে মসজিদটি অবস্থিত সেটি রুই লুই পাহাড়ে অবস্থিত। রুই
লুই ঐ পাহাড়ে আমাদের লুশাই জনগোষ্ঠী বসবাস করে তবে সেখানে লুসাই জনগোষ্ঠী
ছাড়াও চাকমা ত্রিপুরা বসবাস করে।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজেবি ক্যাম্প রয়েছে, সাজেক বিজেপি ক্যাম্পের মধ্যে। সাজেক
বিজেপি ক্যাম্পের উপত্যকায় হেলিকপ্টার নামার জন্য হেলিপ্যাড সুবিধা
রয়েছে।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের কিছু টিপস
ভ্রমন সম্পর্কে কিছু টিপস জানতে হলে অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সাজেক ভ্যালি যাওয়া আগে অবশ্যই আপনাদের প্রথমত ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা
দরকার। ভ্রমণে যাওয়া আগে থেকেই সবকিছু বুকিং করে রাখতে হবে। সাজেক ভ্যালিতে
যাওয়ার আগেই হোটেল বুকিং করে রাখতে হয়।
আমরা মোটামুটি সবাই জানি, সাজেক ভ্যালি একটি পর্যটক স্থান। সেখানে ছুটির
দিনে সবথেকে বেশি ভিড় হয়। যার কারণে ছুটির আগেই সেখানে হোটেল বুকিং হয়ে যায়।
আগে থেকে যদি হোটেল বুকিং না করে থাকেন, তাহলে বিভিন্ন ধরণের অসুবিধা দেখা দেয়।
এবং সব থেকে বড় বিষয় সবসময়ই সাজেকে যাওয়ার আগে আপনাদেরকে বর্ডার গার্ডস এর
অনুমতি নিতে হবে। সাজেকে কোন বিদ্যুৎ নেই কারণ সাজেক হচ্ছে একটি দূরবর্তী পাহাড়ী
এলাকা।
তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঔষধ পাওয়ার ব্যাংক ইত্যাদি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
সাজেকে ঘোরাফেরা করার সময় কিছু হালকা নাস্তা সাথে রাখবেন, কারণ সেখানে বাজার
অনেকটা দূরত্বের মধ্যে থাকায় খাবার সহজে না পাওয়া যেতে পারে। বিশুদ্ধ পানির সংকট
রয়েছে তো আপনারা পারলে সাথে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে নিবেন।
সাজেক ভ্যালি যাওয়ার খরচ কেমন এবং কিভাবে যাব
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত, কিন্তু সাজেক যাওয়ার ক্ষেত্রে একটু বেশি দীর্ঘ
রাস্তা হয়ে যাওয়া লাগে। তবে সাজেক যেতে হলে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা দিয়ে যদি
যাওয়া যায়, তাহলে রাস্তাটি কম হয়। তাহলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্য সাজেক পৌঁছাতে
পারবেন। এক্ষেত্রে প্রথমে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনারা বাস
ব্যবহার করতে পারেন বা ট্রেন ব্যবহার করতে পারেন। বাসে করে যদি আপনারা সাজেক
ভ্যালি ভ্রমণ করতে চান? তাহলে যেকোনো বাসের নন এসি আপনার খরচ হবে ৭৫০ থেকে ৮৫০
টাকা। আর যদি আপনারা এসি বাসে যেতে চান বা সেন্ট মার্টিন পরিবহন এ যেতে চান?
তাহলে খরচ পড়বে ১,০০০ থেকে ১,৬০০ টাকা। এছাড়াও শান্তি পরিবহন বাস সরাসরি
দিঘীনালা পর্যন্ত যায় এবং এর ক্ষেত্রে আপনাদের খরচ ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা। এসব
পরিবহনের বিভিন্ন জায়গায় কাউন্টার রয়েছে।
সাজেক আপনি যদি জিপ গাড়িতে ভ্রমণ করতে চান? এক্ষেত্রে ১২ জনের খরচ পড়বে ১০,৫০০
থেকে ১২,০০ হাজার টাকা। জিপ গাড়ি ভাড়া করে সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ করা যায়। আর যদি
আপনি চান যে আপনি সিএনজিতে করে আপনি সাজেক ভ্রমণ করবেন। এক্ষেত্রে আপনার খরচ কবে
৪,০০০ থেকে ৫,০০০ হাজার টাকা। তবে সাজেকের রাস্তা যেহেতু উঁচু নিচু এক্ষেত্রে
সিএনজিতে ভ্রমণ না করাই ভালো।
সাজেক ভ্রমণ সম্পর্কে লেখক এর মন্তব্য
সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত, এ সম্পর্কে আমরা আগেই জেনে নিয়েছি। আমরা সবাই জানি
সাজেক বাংলাদেশের মধ্যে খুবই সৌন্দর্যপূর্ণ একটি জায়গা। সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের
যাওয়া আগে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন হাতে একটু বেশি সময় থাকে। যাতে করে
সাজেকের সব জায়গা গুলো আপনারা ঘুরে দেখতে পারেন। সাজেকের ঝর্ণাগুলো খুবই
মনোমুগ্ধকর। এছাড়াও পাহাড়ে উঠে মেঘ যখন হাতের কাছ থেকে দেখবেন এর মত মনোমুগ্ধকর
আর কিছুই হতে পারে না।
তাই আমার মতামত হবে আপনাদের একবার হলেও সাজেক ঘুরে আসা প্রয়োজন। এতে আপনারা
বুঝতে পারবেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঠিক কতখানি মনোমুগ্ধকর। আমার
আর্টিকেলটি মাধ্যমে আমি আপনাদের সকলের উপকার করতে চেয়েছি, আশা করি আপনারা সকলে
উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ



রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url